ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২০শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আবহাওয়া
  3. আমাদের পরিবার
  4. আর্ন্তজাতিক
  5. ইসলামী জীবন
  6. করোনা আপডেট
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি-বাকরি
  9. জাতীয়
  10. নাগরিক সংবাদ
  11. পাঁচমিশালি
  12. পাবনা
  13. বরিশাল বিভাগ
  14. বাংলাদেশ
  15. বিনোদন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পাবনায় টিসিবির পণ্য বিক্রি হচ্ছে জামায়াত নেতার দোকানে,তদন্ত চায় এলাকাবাসী

admin
নভেম্বর ৪, ২০২৫ ১১:৪২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

পাবনার আটঘরিয়া উপজেলাধীন লক্ষীপুর ইউনিয়নের ফলিয়া এলাকার এক জামায়াত নেতার দোকানে অতিরিক্ত মুল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর পণ্য ন্যায্য মূল্যে জনসাধারণের মধ্যে বিতরণের সরকারি উদ্যোগ যেন প্রভাবশালী রাজনীতিকদের ব্যক্তিগত ব্যবসার পন্যে পরিনত হয়েছে বলে অভিযোগে প্রকাশ।
জানা গেছে লক্ষীপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ফলিয়া গ্রামে যে দোকানে টিসিবির পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে, সেই দোকানের মালিক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী লক্ষীপুর ইউনিট সভাপতি ও বাইতুলমাল সহ-সম্পাদক আনোয়ার হোসেন।
গত শনিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে আনোয়ার হোসেনের দোকানে অস্বাভাবিক ভিড় লক্ষ্য করেন স্থানীয়রা। টিসিবির পণ্য ৫ কেজি চাল, ২ লিটার তেল, ১ কেজি চিনি ও ১ কেজি মসুর ডাল কেনার জন্য লোকজন জামায়াত নেতার ঐ দোকানে ভিড় জমায় ।
কৌতূহলবশত কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গিয়ে স্তম্ভিত হয়ে পড়েন। তারা দেখতে পান, দোকানে একসাথে ৫১টি স্মার্ট কার্ডের পণ্য বিক্রয়ের কাজ চলছে!
এমন দৃশ্য ধরা পড়তেই এলাকার মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, টিসিবির পণ্য গরিব মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর কথা, অথচ জামায়াতের নেতারা এখন সেটি নিজেদের দোকানে বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করছে!
বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়,টিসিবির স্মার্ট কার্ড চালুর মূল লক্ষ্য ছিল অনিয়ম বন্ধ করা, একই পরিবারের একাধিক সদস্যের কার্ড রোধ করা এবং বিতরণ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনা। কিন্তু একজন রাজনৈতিক নেতা ও খুচরা ব্যবসায়ীর হাতে যখন একসাথে ৫১টি কার্ডের পণ্য আসে, তখন পুরো ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতাই প্রশ্নের মুখে পড়ে।
স্থানীয়দের প্রশ্ন, একজন ব্যক্তির দোকানে এতগুলো কার্ডের পণ্য কীভাবে পৌঁছাল? তিনি কি টিসিবির কোনো অনুমোদিত ডিলার? না কি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সরকারী সহায়তা নিজের নিয়ন্ত্রণে এনেছেন?
সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে আনোয়ার হোসেন নিজেকে জামায়াতের লক্ষীপুর ইউনিয়ন ইউনিটের সভাপতি ও বাইতুলমাল সহ-সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দেন। তার দোকানে সরকারি পণ্য বিক্রয়ের এমন ঘটনা প্রকাশ পাওয়ায় অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, একজন জামায়াত নেতা কতটা প্রভাবশালী হলে টিসিবির মতো সরকারি প্রকল্পের পণ্য নিজের দোকানে এনে বিক্রি করতে পারেন? এ ক্ষমতার উৎস কোথায়?
এলাকাবাসীর অভিযোগ রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নিয়মিতভাবে এমন অপব্যবহার করছে।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়,সরকারের এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল নির্দিষ্ট নিম্ন আয়ের মানুষকে সহায়তা দেয়া। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, অনেক প্রকৃত দরিদ্র এখনো কার্ড পাননি, অথচ প্রভাবশালীরা একের পর এক কার্ডের মালিক।
স্থানীয় এক প্রবীণ নাগরিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ যেন গরিবের হক লুটে নেয়ার উৎসব চলছে। জামায়াত নেতার দোকানে সরকারি পণ্য বিক্রি হতে দেখলে বোঝা যায় নীতির কথা বললেও অর্থলোভের কাছে পরাজিত তারা।
স্থানীয় একজন শিক্ষক বলেন, এভাবে সরকারের সহায়তা প্রকল্প রাজনৈতিক নেতাদের হাতে পড়লে টিসিবির প্রতি জনগণের আস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে। যেখানে জামায়াতের নেতারা সরকারের খাদ্য সহায়তা প্রকল্পের পণ্য অতিরিক্ত মুল্যে নিজেদের দোকানে বিক্রি করেন, সেখানে ন্যায়ের কথা বলার মুখ আর তাদের নেই।
জামায়াত নেতার দোকানে টিসিবি প্রদত্ত ন্যায্য মূল্যের পণ্য বিতরণের খবর গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষের কাছে ছিলো অজানা। ঐ দোকানে ৫১টি স্মার্ট কার্ডের টিসিবির পণ্য বিতরণ করার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এলাকাজুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে।
এ বিষয়ে পুরনো ডিলার শামসুল আলম সংবাদমাধ্যমকে জানান, আমি আগে ডিলার ছিলাম, কিন্তু গত দুই মাস ধরে আমি আর ডিলার নাই। গতকাল শনিবার আমি কোনো টিসিবির পণ্য দেই নাই, নতুন ডিলারই মাল দিচ্ছে।
এদিকে নতুন ডিলার হিসেবে নাম উঠে এসেছে আটঘরিয়া উপজেলার যুবলীগ নেতা পান্নার। বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কোনো দুর্নীতি বা অনিয়ম করেছি কি না, সেটা তদন্ত করে দেখা যেতে পারে। তবে অন্য কোনো বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলুন।
স্থানীয়দের অভিযোগ নতুন ডিলার নিযুক্তির বিষয়টি নিয়ে কোনো সরকারি ঘোষণা হয়নি, অথচ হঠাৎই এক যুবলীগ নেতার দোকান থেকে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়। এতে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন জেগেছে সরকারি ন্যায্য মূল্য কর্মসূচির আড়ালে কি গোপনে রাজনৈতিক প্রভাব ও পণ্য বাণিজ্য চলছে?
আটঘরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুল ইসলাম বলেন, “একজন ব্যক্তির কাছে এতগুলো কার্ড থাকার কথা না একটা-দুইটা নয়, পুরো ৫১টা কার্ড! ওই ব্যক্তির বিস্তারিত নাম ঠিকানা দিন। ট্যাগ অফিসার কীভাবে এটা দেখলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিলারদের বলা থাকে, যখন পণ্য বিতরণ করবে তখন যেন ট্যাগ অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
তদারকি করার জন্য কেউ যায় কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ইউএনও বলেন, আমাদের নির্দেশনা আছে ট্যাগ অফিসারদের যেতে হয়। যদি কোনো কারণে নিজে যেতে না পারেন, তাহলে অফিসের কাউকে পাঠানোর নিয়ম আছে।
তিনি আরও বলেন, আপনি ওই ব্যক্তির নাম-ঠিকানা দিন, আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখব”।
এলাকাবাসী একবাক্যে দাবি তুলেছেন, এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক, দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক যেন গরিবের হক আর কেউ এমনভাবে বিক্রি করতে না পারে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।